Thursday, April 30, 2020

ভালোবাসা এ কি নেশা !

এলোচুলে আঁধার তোমারই
ফাগুনের ঘ্রান !

সেদিন  অনেকদিন পর হৃদয়ের সাথে ফোন এ যোগাযোগ হল।গানের ব্যাপারে কথা উঠতেই বললো লিরিক্স লিখতে যেন চলে আসি স্টুডিও তে । সমস্যা মনে হল একটাই , হৃদয় এর লাগবে হ্যাপি সং অফ লাভ। আমি স্যাড গান খুব দ্রুত লিখতে অভ্যস্ত। তো একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম । গান সবসময় আমি কাউকে ভেবে লিখি। জীবনে দুঃখের জন্য তো মানুষ আছেই ভেবে ভেবে লেখার মত। সুখের জন্য কাকে পাই? 

তখন আমার জীবনের শেষ রিলেশন এর শুরু হয়েছে মাত্র । সেখানেই যে বিবাহ নিয়তি অপেক্ষা করছিল তখনও জানতাম না। ছেলেটার সাথে দেখা হতো খুব কম। দূরের পথ বলে বললাম যেন অফিস শেষে নিতে আসে আমাকে। ততক্ষণ এ গানটা লিখে ফেলবো। 

ও আমাকে বলেছিল যে এখন কেন স্যাড লিরিক্স লিখবে, এখন তো পরিবর্তন আসছে। ওকে নিয়ে এর আগে কোন গান আমি লিখিনি । তারপর ভাবলাম হ্যাপি সং টা তবে ওকে ভেবেই শুরু করি।
আমি স্টুডিও তে গান লিখছিলাম সুর শুনে শুনে । ভাবছিলাম ভালবাসার মানে । আমরা কেন সুখী হই ভালবেসে? আর কেনই বা আমার জীবনে একজন মানুষ সারাক্ষণ পাহারা দেয় ? তার সাথে অভিমান করলেও আবার ফিরে আসতে হয়। যদি ও বা সে ই আগে ফিরে। কারণ কি?

ভালবাসা হলো প্রকাণ্ড এক নেশার পাহাড়। সেই পাহাড়ে ওঠা আর নামা দুটোই কঠিন ।
লিরিক্স টা আমি অনেকবার পরিবর্তন করি সেদিন, কিন্তু মন পড়ে ছিল নিচে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করছে । আমি উপরে ডাকলাম , কিন্তু সে কিছুটা লজ্জাবোধ করেছিল । 

এভাবে খুব সুন্দরমত তৈরি হলো এই গান । হৃদয় প্রচুর পরিশ্রম করেছে গানটি নিয়ে। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই মন থেকে । হৃদয় খান এর সাথে করা দ্বিতীয় গান এটা । ২০০৯ সালের হৃদয় খানের একক  '' বলনা '' এ্যালবাম এ ''Can You Hear My Scream'' নামের গানটি প্রকাশ পায়। 

সামনে হৃদয় খান এর কণ্ঠে আরও অনেক হ্যাপি সং আপনাদের উপহার দিতে পারবো আশা রাখি। কাজ চলছে । 

'Bhalobasha Eki Nesha ' Bengali Song Lyrics.This song is sung By Hridoy Khan & Lyrics planned By Susmita Biswas Sathi.This track was released in 15th June 2018. ( Eid ul-Fitr)
গানটি শুনতে ক্লিক করুন 


BHALOBASHA EKI NESHA LYRICS IN BANGLA

ভালোবাসা এ কি নেশা,
কতবার ফিরে আসা,
দরজায় কড়া নাড়ি বারবার।

কত পথ পেরিয়ে এসে,
ফেলেছি ভালোবেসে,
কাছে এসো আমার !

ভালোবাসা এ কি নেশা,
কতবার ফিরে আসা,
দরজায় কড়া নাড়ি বারবার।

এলোচুলে আঁধার তোমারই
ফাগুনের ঘ্রান !
মুঠো ভরে কাছে আমারই 
জুড়াও এই প্রাণ। 

অভিমানী তোমার হাসিতে 
কি আছে জাদু ?
ঘুরে ফিরে তোমার মনেতে 
ফিরেছি তবু। 

কত পথ পেরিয়ে এসে,
ফেলেছি ভালোবেসে,
কাছে এসো আমার !

ভালোবাসা এ কি নেশা,
কতবার ফিরে আসা,
দরজায় কড়া নাড়ি বারবার।

চোখে চেয়ে কাজল পড়িয়ে,
আগুন হবো !
ছুঁয়ে দিলেই তোমাকে নিয়ে,
শীতল রবো !

আমরা দু'জন আঁধার ঘরেতে,
ঠিকানা বিহীন !
পায়ের নুপুর ভেজা অতলে,
এ প্রেমের দিন। 


কত পথ পেরিয়ে এসে,
ফেলেছি ভালোবেসে,
কাছে এসো আমার !

ভালোবাসা এ কি নেশা,
কতবার ফিরে আসা,
দরজায় কড়া নাড়ি বারবার।


একটা ঝড় চাই

একটা ঝড় চাই
যাতে সব ছাই উড়ে যাবে,
একটা ঘর চাই
যেখান থেকে দেখা না যাবে !

তুফান আসুক আরো জোরে
তুফান উঠেছে ভেতরে -
ভেতর দেখা যায় না বলে
বাহির মেতেছে কোলাহলে ;

বাহির দিচ্ছে দোষ
ভেতর দিয়েছে প্রেম
ছাইচাপা আফসোস
হোক না শেষ লেনদেন ।

বাহিরে এখন মেঘ
আমি ঝড়ের অপেক্ষায় ,
চোখ দেখেছে মিথ্যে আবেগ
আর যেন দেখতে না হয় ।

সব শেষে আমি ঝড় চাই
যাতে তার ছাই উড়ে যাবে -
এ শহর মানবে কিনা -
বাতাস আগুন এখানেই রবে ।

তবু যেন দেখা না যাবে
তবু যেন দেখা না হবে ,
এমন একটা ঝড় চাই
যাতে সব ছাই উড়ে যাবে।

সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী
২৯.০৪.২০২০


Tuesday, April 28, 2020

নাগিব হকের ‘অঙ্কটা ভুল’


অ্যালবামের সবগুলো গানের কথা লিখেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী।  সাথীই এ অ্যালবাম প্রকাশের মূল পরিকল্পনাকারী।
সাথী গ্লিটজকে জানান, ২০১২ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় নাগিব হকের সঙ্গে। গান নিয়ে নিজেদের নানা ভাবনা শেয়ারের পর সাথী জানতে পারেন, নাগিব কখনও বাংলা গান নিয়ে কাজ করেনি। বাংলাদেশি হিসেবে নাগিবের কোনো বাংলা গান নেই, এটা জেনে ভীষণ ‘অবাক’ হন সাথী।
নাগিব তখন বাংলা গান নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। একদিন পরিকল্পনা করলেন, বাংলা গানের অ্যালবামই করে ফেলবেন। তিনি ঠিক করলেন, ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে রক, পপের নানা ঘরানার ফিউশনে সাজানো হবে পুরো অ্যালবামটি। যন্ত্রানুসঙ্গেও থাকছে ‘অভিনবত্ব’।
নাগিব জানান, অ্যালবামে বেঠোফেন, তাইকভস্কির পাশ্চাত্যের সংগীতস্রষ্ঠাদের প্রভাব যেমন থাকবে তেমনি ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের প্রতিফলনও থাকবে। আরও থাকবে চাইনিজ ‘এর-হু’ ঘরানার ছোঁয়া।
পুরো অ্যালবামে থাকছে ১৫টি গান। ইতোমধ্যে ‘মিথ্যে’, ‘কী আর চাই-হোয়াট ইউ নিড টুনাইট’, ‘ছেঁড়া’ শিরোনামে তিনটি গান অনলাইনে মুক্তি দিয়েছেন তারা।  ‘কী আর চাই’ গানের সঙ্গে এর মিউজিক ভিডিও রিলিজ করেছেন অনলাইনে।
সাথী জানান,  জুনে মুক্তি পাবে ক্ল্যাসিক্যাল ধাঁচের ‘শেষ কথা’ গানটি। অ্যালবামের বিশেষত্ব সম্পর্কে নাগিব বলেন, “পাশ্চাত্যের যন্ত্রানুসঙ্গের সঙ্গে বাংলা গানের এমন মেলবন্ধন খুব কমই হয়েছে। অ্যালবামের গানগুলো লেখার সময় সমসাময়িক নানা প্রেক্ষাপটকে প্রাধান্য দিয়েছে সাথী।  নানা ধারার শ্রোতার কথা মাথায় রেখে মেলোডিনির্ভর গানগুলোতে ফিউশনে নতুনত্ব আনা হচ্ছে।”
সাথী জানান, এ অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ করবে নাগিব ও সাথীর যৌথ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘জাদুঘর’। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাশ্চাত্যের শ্রোতাদের উপযোগী করে বাংলা গানগুলোকে তারা তাদের ঘরে পৌঁছে দিতে চান তারা।
নাগিব হক ২০০৬ সাল থেকে গানকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। বন্ধু মাইক লির সঙ্গে মিলে নিজেদের স্টুডিওতে শুরু করেন সংগীতায়োজন। প্রথমে হিপহপ ঘরানার গান নিয়ে কাজ করলেও নিজস্ব ঘরানার প্রতি মনযোগী হয়ে উঠেন নাগিব।  বন্ধু থেকে আলাদা হয়ে নিজের প্রতিষ্ঠান রেড মেইজ গড়েন। রেড মেইজের ব্যানারে তিনি কাজ করেছেন মার্কিন সংগীতশিল্পী আমাদি জে, বিজনেজ, লেনে রাইট, ফিয়া মনিকো, তায়রা বি ক্যাসিয়াসের সঙ্গে। নিজেও পারফর্ম করেছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।  
২০১১ সালে গ্র্যামিজ ন্যাশনাল একাডেমি অব রেকর্ডিংস আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের সদস্যপদ লাভ করেন।
খুলনার মেয়ে সাথী ২০০৬ সালে হাবিব ওয়াহিদের প্রথম অ্যালবামের জন্য ‘স্বপ্নের চেয়ে মধুর’ শিরোনামে একটি গান লেখেন। তখন সাথী দশম শ্রেণিতে পড়তেন। এক গানেই আলোচনায় উঠে আসেন সাথী।
হাবিবের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘বলছি তোমাকে’র জন্যও গান লিখেছেন সাথী। সিনেমার জন্য লিখছেন তিনি। শেষ গান লিখেছেন রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ সিনেমার জন্য। 


‘চোরাবালি’ সিনেমার গান

তারিখঃ শনিবার, ৩১ আগস্ট ২০১৩, ১৬ ভাদ্র ১৪২০, ২৩ শাওয়াল ১৪৩৪

আগামী রোজার ঈদ ও কোরবানির ঈদের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তি দেওয়া হবে রেদওয়ান রনির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চোরাবালি’। ছবিটি মুক্তির আগেই এ মাসের শেষ দিকে বাজারে আসছে চোরাবালি চলচ্চিত্রের অডিও অ্যালবাম। লেজার ভিশনের ব্যানারে চোরাবালি চলচ্চিত্রের অডিও অ্যালবামটি বাজারে আসবে বলে জানালেন রেদওয়ান রনি।
চোরাবালিতে মোট গান আছে ছয়টি। গানগুলোর শিরোনাম হচ্ছে কেয়ারফুলি কেয়ারলেস, প্রেম, অপারগতা, চোরাবালি ঘিরে ধরে আমায়, মা ও দে ভিজিয়ে দে। গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন যথাক্রমে আইয়ুব বাচ্চু, হূদয় খান, কণা, আরফিন রুমী, অনুপম রায়, ন্যান্সি ও মিলন মাহমুদ। গানের কথা লিখেছেন যথাক্রমে কবির বকুল, অনুপম রায়, মারজুক রাসেল, সাজ্জাদ হুসাইন, গুঞ্জন চোধুরী, সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী ও মিলন মাহমুদ। ‘চোরাবালি’-তে যাঁরা গান গেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই নিজের গান সুর করেছেন। তবে কণার ‘দে ভিজিয়ে দে’ গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন ফুয়াদ আল মুক্তাদীর।

ছবির গানগুলো সম্পর্কে রেদওয়ান রনি বলেন, ‘আমার প্রথম চলচ্চিত্র চোরাবালি। ছবিটির এখন ডাবিংসহ অন্যান্য কাজ চলছে। এর আগে ছবিটির গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এটা আমার জন্য অনেক বেশি আনন্দের। ছবির গানগুলো শ্রোতাদের অন্য রকম ভালোলাগা তৈরি করবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’
‘চোরাবালি’ ছবির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান ও কলকাতার ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। আরও অভিনয় করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান, সোহেল রানা, শহীদুজ্জামান সেলিম, ইরেশ যাকের প্রমুখ।
http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2012-06-13/news/265505
সুস্মিতার লেখা "চোরাবালি " সিনেমার গান

গানের পিছনের গল্প এবং অন্যান্য (স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা )

খুব ছোটবেলায় যখন থেকে অক্ষর গুছিয়ে শব্দ আর শব্দ গুছিয়ে বাক্য রচনা করা শিখেছেন তখন থেকেই কবিতা, গল্প আর গান লেখালেখি করেন সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী। প্রথম কবিতা লিখেছেন ৫ বছর বয়সে। প্রথম গল্প লিখেছেন ৬ বছর বয়সে আর প্রথম গান লিখেছেন ১০ বছর বয়সে। ২০০৭ সালে সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী এস এস সি পাশ করেছেন।
তখন সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী ১০ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী। “স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা” গানটি ওই সময়েই লেখা হয়। ২০০৬ এ রিলিজ হওয়া হাবিব ওয়াহিদের প্রথম সোলো এলবাম 'শোনো' এর গান। সকল শ্রোতার অন্তরে হাবিব ওয়াহিদ বীরদর্পে জায়গা করে নিয়েছেন এ গান দিয়ে। 'শোনো' এলবাম এর গানগুলো শুনলে এখনও বারবার প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়। “স্বপ্নে তার সাথে হয় দেখা” শুনে এখনও এক মায়াবতী রমণীর চেহারা ফুটে ওঠে। দারুন শ্রোতাপ্রিয়তা পায় গানটি। এই এলবামের মাধ্যমেই লিরিসিস্ট (গীতিকার) হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন খুলনার মেয়ে সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী
হাবিব ওয়াহিদের অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানের গীতিকার বর্তমানে স্থপতি এই সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এত চমৎকার সব লিরিক্স লিখে ফেলা নি:সন্দেহে চমকপ্রদ। শুধু হাবিব নয় হৃদয় খান, ন্যান্সি, তাহসান সহ আরো অনেক জনপ্রিয় সিঙ্গারের জন্য গান লিখেছেন সুস্মিতা।



স্বপ্নকন্যার গল্প (সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী)

সুস্মিতার বয়স তখন কতই বা হবে । বড়জোর পাঁচ কিংবা ছয়। আশপাশের আট দশটা স্বাভাবিক শিশুর মতোই সে সময়টা স্কুলের গণ্ডিতে পা রাখা শুরু সুস্মিতার। এক এক করে পরিচয় অক্ষর আর শব্দের সাথে। কিন্তু অন্য দশটা শিশু যখন বানান করে আম কিংবা বই লেখাতে ব্যস্ত সুস্মিতার মনে তখন অক্ষরের সাথে সাথে অনুপ্রবেশ ছন্দেরও। একেবারে ছেলেমানুষী ভাবনা থেকে শুরু ছড়া লেখা। কিন্তু অতোটুকুন বয়সেও সুস্মিতা যে তার বয়সের আর দশটা শিশুর চাইতে একটু বেশি প্রতিভাবান
সেটা প্রকাশিত হতে দেরী হয় না। সুস্মিতার লেখা ছড়া ভীষণ মনে ধরে যায় মুর্শিদাবাদ থেকে আশা তার চাচার বন্ধু নির্মল সরকারের। আর সেই ভালোলাগার সূত্র ধরেই দেশেই বাইরে পশ্চিমবঙ্গের '' সূর্যসেনা '' পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সুস্মিতা বিশ্বাসের প্রথম লেখা।
ছোটবেলায় ছড়া কিংবা গল্প লেখার শখ হয়তো অনেকের মাঝেই থাকে। কৈশোর পেরিয়ে তারুন্যার পথযাত্রী হতে হতে সেই সব শখ মিলিয়েও যায় বাস্তবের চোরাপথে। কিন্তু সুস্মিতা যেন এখানেও ছিলেন ভিন্ন ধাঁচের। ছড়া দিয়ে লেখালেখি শুরু করা সুস্মিতা ক্লাস টু' তে থাকাকালীন সময়েই সবাইকে অবাক করে দেন গল্প লিখে। এবারও পশ্চিমবঙ্গের একটা শারদীয় সংখ্যা বেশ যত্ন করেই ছাপে ক্ষুদে এই লেখিকার গল্প খানা। এরপর একে একে ছড়া আর গল্পের পথ ধরে আরো কিছুদিন চললো সুস্মিতার কল্পনার পাখা। এরপর হঠাৎ করেই কি মনে করে সুস্মিতা হাতে তুলে নিলেন রঙতুলি। একের পর এক নাম লেখাতে থাকলেন আশেপাশের সকল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাতে। দেখা গেল এখানেও শীর্ষস্থান দখল করে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না সুস্মিতাকে। কিন্তু বিধিবাম। চিত্রাঙ্কনের মাঝেও যেন পুরোপুরি ডুব দিতে পারলেন না সুস্মিতা। ভাবনা বদলের ধারাবাহিকতায় আরো একবার সমস্ত মনোযোগ জমা হলো গল্প লেখায়। সেই সাথে বাড়তে থাকলো গল্পের বই পড়ার ঝোঁক। এ সময় সুস্মিতার মাঝে গল্প লেখার বাতিকটা এমন ই পেয়ে বসেছিল যে টিফিনের সময়ও বসে বসে শিশুতোষ গল্প লিখে অন্যকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করতেন তিনি।
ষষ্ঠ শ্রেণীতে ওঠার পর গল্পের নদীতে খানিকটা ভাটা পড়লো। সুস্মিতা এবার হাত দিলেন কবিতা লেখায়। নাতিদীর্ঘ অতীতের ধারাবাহিকতায় এখনেও পেলেন সাফল্য। স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হতে থাকলো কবিতা। আর বাসায় গানের ওস্তাদ রেখে শুরু হলো গান শেখাটাও। প্রফুল্ল রায়ের কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ক্লাসিক্যাল এবং আধুনিক গানের তামিল নিলেন বিষাণ চন্দ্র মণ্ডলের কাছে। আসলে গীতিকার হিসেবে সুস্মিতা বিশ্বাসের যে পরিচিতি তার শুরুটাও ছিল এই সময়ই। সুস্মিতার লেখা কবিতার কথা সবাই কমবেশি জানতেন। জানা ছিল গানের শিক্ষক প্রফুল্ল রায়েরও। একদিন তিনি সুস্মিতাকে বলেছিলেন শ্যামা সংগীত লেখার জন্যে। সেই শ্যামা সঙ্গীত থেকেই শুরু। এরপর যখনই যুতসই কোনো বিষয় মাথায় আসতো তখন সেটিকে গানের ছন্দে বন্দি করার জন্যে অস্থির হয়ে যেতেন সুস্মিতা। এইট - নাইনে তার গান গাওয়া হলো মঞ্চেও। আসলে সুস্মিতার আরেক সঙ্গীত শিক্ষক বিধান চন্দ্র মণ্ডলই সুস্মিতার লেখা আধুনিক দুটি গানের সুরারোপ তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় শ্রোতাদের মাঝে। এর ফলে রাতারাতি খ্যাতি না এলেও মানুষের কাছে পরিচিতি আর অল্প বয়সে গান লেখার বিস্ময়কর প্রতিভার স্বীকৃতি- এ দুটোই পেয়েছিলেন সুস্মিতা।
গীতিকার হিসেবে সুস্মিতার আত্মবিশ্বাসের পালে যখন সবে একটু আধটু হাওয়া লাগতে শুরু করেছে ঠিক তখনই পরিচয় হয় কণ্ঠশিল্পী মুন আর লিমন এর সাথে। এর দু'জনই তখন ভালো গান করেন। সুস্মিতার লেখা গান কিংবা কবিতার প্রশংসা উঠে আসে তাদের কণ্ঠেও। কিন্তু খুলনার মেয়ে সুস্মিতার সাথে তাদের যোগাযোগটা ছিল শুধু ফোনেই। এর মাঝে লিমন একদিন তাকে পরামর্শ দেন জনপ্রিয় সুরকার হাবিব ওয়াহিদের সাথে যোগাযোগ করার। আর সবার মতই সুস্মিতার কাছেও হাবিব মানেই অন্যরকম ক্রেজ। তাই একদিন সাহস করে হাবিবের বাসায় ফোনও করলেন তিনি। কথা হলো হাবিবের বাবার সাথে। তিনি পরামর্শ দেন হাবিবের সহকারী মোশাররফ এর সাথে যোগাযোগ করতে। যোগাযোগ হলো। উৎসাহ পেয়ে গানও পাঠিয়ে দিলেন তিনি। এই গানগুলোর মধ্যে "স্বপ্নের চেয়ে মধুর" গানটি প্রথম দেখাতে হাবিবের এতোটাই ভালো লেগে গিয়েছিল যে মাত্র দু'দিনের মাঝে গানের কথায় সুর বসিয়ে সুস্মিতাকে ভীষণ চমকে দেন হাবিব। আর হাবিবের প্রথম সলো অ্যালবাম "শোনো"র অংশ হয়ে যখন বাজতে থাকে আশেপাশের সব জায়গায় তখন বিস্ময়প্রতিভা সুস্মিতার নিজেরই বিস্মিত হবার পালা। "শোনো " অ্যালবামের পর হাবিবের সর্বশেষ অ্যালবাম "বলছি তোমাকে" র সবগুলো গানই ছিল সুস্মিতার লেখা। সে সুবাদে সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী নামটির সাথেও এখন কমবেশি সবাই জনপ্রিয়। তবে হাতগোনা দুটি অ্যালবামের হাত ধরেই যে জনপ্রিয়তার দেখা সুস্মিতা পেয়েছেন সেটি তাকে আরো বিনয়ী করে তুলেছে । নিজের গান নিয়ে সুস্মিতা উচ্চকণ্ঠ নন। এমনকি জনপ্রিয়তার হাত ধরে খ্যাতির পেছনে ছোটার মানসিকতাও নেই নিভৃতচারী এই গীতিকারের। আর সময়ের মূল লক্ষ্য, মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাওয়া গোল্ডেন এ প্লাস ধরে রাখতে হবে উচ্চ মাধ্যমিকেও।
কারণ গান হোক কিংবা পড়াশোনা , কোনো জায়গাতেই শেষের কাতারে থাকতে চান না সুস্মিতা।

লেখাঃ রাশেদুল হাসান শুভ
প্রকাশিতঃ বিনোদন বর্ষ ৬ সংখ্যা ১১ 
তারিখঃ জুন ২৫-জুলাই ০৯, ২০০৮ 

https://www.youtube.com/watch?v=lmm4w8i-ccg

Monday, April 20, 2020

অকথ্য মিছিলে

কিছু ভাবছে না সময়,কিছু বলছে না মন...
অসময়ের বুঝ ঠোঁটে; বলার আশা চিরন্তন__
না বুঝেই মহাকাশ তোমার আমার নীলে...
না বুঝেই সময়টা অকথ্য মিছিলে___
কখনও তো ভাববারও নেই অবকাশ...
নীলে ধুলো ঝড় ... মেঘে সর্বনাশ__
আমরা অকথ্য মিছিলে____!
16/04/2013

ভালবাসা আর বিশ্বাস তোমার জন্য তোলা থাকুক,
তোমার মন না আসুক
তবু সব বলা থাকুক।
এদিন কারোই নয়
তাই পর করেই রাখুক।...
বছরে বছরে আঁটকে যায় বিশেষ দিনের শুরু আর শেষ ভয়,
যুগ পার হয়ে যাবে ,এভাবেই একা একা গুণে যাব বাড়ন্ত সময়,
শুধু মনে পড়বে আমাকে ,সাজানো মুহূর্তের আমি থাকব না ...
বার মাসে ঘুরবে বছর,ভুল্বে না কিছু দিনের বাঁধন,
দিন ফিরবে চেনা তারিখে, ফিরবে না কিছু ''তুমি'' আর মন !
বাড়ন্ত স্ম্রিতি...কেন ফেরে বাড়ন্ত রূপে ...
বছর বছর ...!!

Featured Post

স্বপ্নকন্যার গল্প (সুস্মিতা বিশ্বাস সাথী)

সুস্মিতার বয়স তখন কতই বা হবে । বড়জোর পাঁচ কিংবা ছয়। আশপাশের আট দশটা স্বাভাবিক শিশুর মতোই সে সময়টা স্কুলের গণ্ডিতে পা রাখা শুরু সুস্মিতার...